ক্লায়েন্ট না খেপিয়ে কিভাবে freelancing সার্ভিসের জন্য মূল্য ঠিক করবেন?
হঠাৎ করে ক্লায়েন্ট এর মেসেজ (upwork কিংবা Fiverr ) – এ। আমার ওয়েবসাইটে কিছু পরিবর্তন করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা হলো : ইমেইল এড্রেস পরিবর্তন এর কথা।
আমিও খুশি মনে ৩০ ডলার চেয়ে মেসেজ দিলাম। এই রকম কাজ কতক্ষণ আর লাগবে ?
মজা শুরু হলো একটু পর। মেসেজ এর পর মেসেজ আসতেছে :
- ইমেইল পরিবর্তন করো
- ওয়েবসাইট এর ডিজাইন মেনুতে একটু ঠিক করতে হবে
- ওয়েবসাইট এর লিংক কোন গুলো ঠিক নাই খুঁজে বের করো। লিস্ট বানাও। তারপর ওই লিংক গুলো পরিবর্তন করো।
আমি সাথে সাথে মেসেজ দিলাম। আরে আরে দাঁড়াও। একটু ধৈর্য্য ধরো। এগুলো তোমার উদাহরণ এর সাথে ঠিক যায় না। আর এই সব কাজ করার জন্য ৩০ ডলার খুবই কম টাকা।
এই মেসেজ পেয়ে ক্লায়েন্ট ক্ষিপ্ত। আমি ও বিরক্ত। ঠিক মতন মেসেজ দিয়ে কাজ বুঝে নেয়া হয় নাই। ক্লায়েন্ট ৩০ ডলার শুনে লাফাতে লাফাতে কাজ দেয়া শুরু করেছে।
ভুলটা কোথায় ?
ভুলটা আসলে কার ?
উপরের ঘটনাটা শুধু মাত্র একটা উদাহরণ। আমাদের অনেকের লাইফে এই রকম ঘটনা হয়েছে অনেক বার। এর জন্য দায়ী দুই পক্ষই।
এই ধরণের ঘটনা এড়ানোর উপায় কি ? শুরুতেই হয়তো কাজের পরিমাণ ১০০ ভাগ বুঝা সম্ভব না। তাহলে উপায় ? উপায় বের করার আগে আমরা Freelancing সেক্টর-এ Pricing কিভাবে করা উচিত সেটা নিয়ে একটা ধারণা নিতে পারি।
কিভাবে data scrape / crawler / bot বানানো যায় এবং কাজ পাওয়া যায় ?
১. ঘন্টা ভিত্তিতে প্রাইসিং:
ফ্রীল্যানসিং জগতে অন্যতম জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে ঘন্টা ভিত্তিতে কাজ করা। কাজ না শেষ হওয়া পর্যন্ত, ঘড়ি চলছে। কাজ শেষ তো, ঘড়ির হিসাব শেষ। ক্লায়েন্ট সেই ঘড়ির হিসেবে টাকা পেমেন্ট করবে। ফ্রীলান্সার হিসেবে আমি ও খুশি, ক্লায়েন্ট ও খুশি।
আসলেই কি তাই ?
ঘন্টা হিসেবের কাজে অনেক ক্লায়েন্ট শুরুতেই জানতে চায়, কাজ শেষ করতে কতক্ষণ লাগতে পারে। কাজের পরিমান বুঝে একটা হিসেব দেয়া হলো। দেখা গেলো কাজ করতে আরো বেশি সময় লাগছে। এই অতিরিক্ত ঘন্টার টাকা পেতে ক্লায়েন্ট এর সাথে দেখা গেলো সমস্যা তৈরী হচ্ছে।
উপরের ঘটনা চিন্তা করে দেখা গেলো পরের কাজে বেশি ঘন্টা চাওয়া হয়েছে একই কাজ করতে। সাথে মনে একটা ভয় ও থাকে যদি ক্লায়েন্ট খরচ চিন্তা করে কাজ না দেয়। যদি ঘন্টা উল্লেখ না করেন, ক্লায়েন্ট এর জানার উপায় নাই কতক্ষন লাগতে পারে। ম্যাক্সিমাম ক্লায়েন্ট চিন্তা করে তার দেয়া ** সহজ ** কাজ করতে বেশি টাকা চাইতেছে ফ্রীলান্সাররা। – কার কার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে ?
তাহলেতো উভয় সংকট। ঘন্টা কম দেখালেও নিজের ক্ষতি , বেশি দিলেও নিজের ক্ষতি। একটা মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে। কত টুকু কাজ করতে হবে, তার পুরো Specification প্রজেক্ট এর শুরুতেই নিয়ে নিতে হবে। তারপর ছোট ছোট task এ ভাগ করে নেয়া ভালো। তারপর task গুলো করতে কত সময় লাগবে সেটা একসাথে হিসেবে করে তারপর ক্লায়েন্ট কে দেয়া। ক্লায়েন্ট জানলো , বুঝলো। কোথাও পরিবর্তন করলে ক্লায়েন্ট এক্সট্রা ঘন্টার হিসেবে দিতে বাধ্য থাকবে।
২. ফিক্সড pricing :
এই পদ্ধতি Hourly প্রাইসিং এর চেয়ে ভালো। কারণ কি? ঘড়ি ধরে কাজ করার প্রেসার নাই। প্রজেক্ট এর স্পেসিফিকেশন বুঝে একটা pricing দিয়ে দিতে হবে। তারপর, সাথে শর্ত দিয়ে দেয়া, যদি প্রজেক্টে কোনো পরিবর্তন হয়, তাহলে pricing এর ধরণ কি রকম হবে।
৩. ফিক্সড কনসালটেন্ট Pricing :
আমার সব চেয়ে পছন্দের পদ্ধতি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাজ করতে হয় ক্লায়েন্ট এর অফিসে। ক্লায়েন্ট এর সাথে কনসালটেন্ট এর কাজের শুরুতে চুক্তি থাকে। চুক্তি হয় প্রজেক্ট এর ভিত্তিতে কিংবা মাস ভিত্তিতে। প্রজেক্ট শেষ তো, কন্সালটেন্সি শেষ। কিংবা মাস ভিত্তিক হলেও, একই কথা। সুবিধা কি ? ক্লায়েন্ট আগে থেকেই কনসালটেন্ট এর hourly প্রাইস জানে। তারপর প্রাইস পছন্দ হলে, প্রজেক্ট শুরু। ক্লায়েন্ট কিংবা কনসালটেন্ট এর মধ্যে প্রতক্ষ্য কথা হয়। প্রব্লেম শেয়ার করা যায়। সল্যুশন চোখের সামনে দেখা যায়। সুতরাং ২ পক্ষের জন্য কাজ করা অনেক মসৃন হয়।
মোদ্দা কথা , দুনিয়াতে প্রচুর আইডিয়া আছে। অনেক ক্লায়েন্ট আছে, যাদের ভালো কাজ দরকার। freelancer হিসেবে নিজেকে সঠিক ভাবে present করতে পারা এবং সুন্দর ভাবে কাজ করে দিতে পারাটাই হল স্বার্থকতা।
এই পোস্টের কমেন্টে জানাবেন কোন পদ্ধতি আপনার পছন্দ? :
ঘন্টা ভিত্তিতে প্রাইসিং
ফিক্সড pricing নাকি
ফিক্সড কনসালটেন্ট Pricing
নতুন টিপস পেতে সাবস্ক্রাইব করুন: